বঙ্কিমচন্দ্রের স্বদেশপ্রেম জাতীয়তাবাদ ও রাজনৈতিক চেতনায়‘আনন্দমঠ
Posted on : January 26, 2022Author : Piu Karmakar
ভূমিকা
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়১৮৩৮খ্রিস্টাব্দে কলকাতার নিকটস্থ নৈহাটির কাঁঠালপাড়া গ্রামে এক ধনী, শিক্ষিত এবং হিন্দু-ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।পিতা যাদব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ইংরেজ সরকারের অধীনে ডেপুটি কালেক্টরের চাকুরী করতেন।কাঁঠালপাড়াতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর বঙ্কিমচন্দ্র হুগলি কলেজে ভর্তি হন।এক অসামান্য মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি শ্রীনাম ন্যায়বাগীশ নামক একজন খ্যাতিসম্পন্ন পন্ডিতের টোলে সংস্কৃত সাহিত্য ও ব্যাকরণ অধ্যয়ন করেন। ইংরেজি এবং সংস্কৃত উভয় ভাষায় তিনি অত্যন্ত সুদক্ষ ছিলেন যে কারণে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের সংস্কৃতিকে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে তুলনা করতে পেরেছিলেন।ইংরেজ সরকারের অধীনে ডেপুটি কালেক্টরের চাকুরী নিয়ে কর্মজীবনে তাঁর প্রবেশ ঘটে। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তৎকালীন সরকার তাঁকে ‘রায়বাহাদুর’ও ‘সি.আই.ই’ উপাধি প্রদান করেন।ইংরেজি সাহিত্য চর্চা দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে তিনি বাংলা সাহিত্যে নিজের অবদান প্রদান করেন।১৮৭২সালে তাঁর সম্পাদনায় ‘বঙ্গদর্শন’ নামক এক মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় যাতৎকালীন শিক্ষিত বাঙালির মনোগ্রাহী হয়ে ওঠে। যেখানে তিনি ‘কমলাকান্তের দপ্তর’( ১৮৭৫) প্রবন্ধটি কয়েকটি ভাগে রচনা করেন।এই প্রবন্ধে তাঁর সাম্যবাদ ও রাজনৈতিক চেতনা পরিস্ফুটিত হয়।সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন সময়ে রচনা করেছেন ‘দেবী চৌধুরানী’ (১৮৮৪),‘কৃষ্ণচরিত’ (১৮৮৬), ‘দূর্গেশনন্দিনি’ (১৮৮৭),‘সীতারাম’ (১৮৮৭),‘ধর্ম্মতত্ত্ব’ (১৮৮৮) প্রভৃতি।
বঙ্কিমচন্দ্র ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি বঙ্গদর্শন পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে ( বাংলা,১২৮৭ বঙ্গাব্দে ) চৈত্র মাসে রচনা শুরু করেন। অবশেষে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দেএটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।বঙ্কিমচন্দ্র এই উপন্যাসটি উৎসর্গ করেন তাঁরপ্রয়াত বন্ধু শ্রী দীনবন্ধু মিত্র-কে।
পটভূমিকা
উনবিংশ শতাব্দীর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচারের স্বরূপ এবং পরাধীনতার মর্মবেদনাকে তুলে ধরে তৎকালীন ভারতীয় সাহিত্য জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেম সম্পর্কে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে।মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্র, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রমেশচন্দ্র দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ-তাঁদের বিভিন্ন রচনায় এবং অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রে তৎকালীন ভারতবর্ষের প্রকৃত স্বরূপ ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রকাশ পেতে শুরু করে।এই সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতীয়তাবাদী রচনা ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’।এই উপন্যাসেরমূল প্রেক্ষাপট ছিল১১৭৬বঙ্গাব্দে ‘বাংলার মন্বন্তর’ এবং১৭৭০ খ্রিস্টাব্দের ‘সন্ন্যাসী বিদ্রোহ’।তৎকালীন সময়ে মানুষের হাহাকার ও অন্নাভাবের অবস্থাকে কেন্দ্র করে তিনি এই উপন্যাসটি রচনা করেছিলেন।
স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদ
‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের মধ্যদিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে বিদ্রোহের আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ন্যাসের নতুন আদর্শ প্রচার করে তিনি মাতৃমুক্তি যঞ্জে নিবেদিতপ্রাণ একদল রাজনৈতিক সন্ন্যাসীর কথা বলেন। যাঁদের মূল উদ্দেশ্য হবে মানবমুক্তি, দেশমাতৃকার মুক্তি এবং মানব কল্যাণ। যাঁদের এক হাতে থাকবে মায়ের পূজার ফুল এবং অন্য হাতে থাকবে অস্ত্র। অর্থাৎ সন্ন্যাসীরা একদিকে যেমন মাতৃমুক্তির মাধ্যমে দেশবাসীর কল্যান করবেন অন্যদিকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদের পতন করবেন।বঙ্কিমচন্দ্র বিপ্লবী এবং চরমপন্থী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’- এ যে ‘অনুশীলন তত্ত্ব’র উল্লেখরয়েছে তার থেকেই বিপ্লবী গুপ্ত সমিতি ‘অনুশীলন সমিতি’ নামটি গ্রহণ করেছিল। চরমপন্থী আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে মূলত১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁর রচিত “বন্দেমাতরম্”ধ্বনি বিশেষভাবে ভারতবর্ষকে জাগরিত করেছিল। তিনি ইউরোপীয় ইতিহাসথেকে বুঝেছিলেন যে জাতীয়তাবোধ জাতীয় উন্নতির পথ প্রশস্ত করে, কিন্তু তিনি কখনোই ইউরোপীয়দের অনুকরণে জাতীয়তাবোধকে সমর্থন করেননি। কারণ তিনি মনে করতেন যে ইউরোপে দেশপ্রেম থাকলেও বিশ্বমানবপ্রেম নেই। যে কারণে তারা নিজ দেশের উন্নতি সাধনের স্বার্থে সমগ্র মানবজাতির ক্ষয়ক্ষতি করেছে ও যুদ্ধ বিদ্রোহের সৃষ্টি করেছে।তাই তিনি ইউরোপীয়দের দেশপ্রেম সম্পর্কে লিখেছেন,“তাঁরা আপনার জাতিকে ভালোবাসেন, অন্য জাতিকে দেখিতে পারেন না, ইহাই তাঁহাদের স্বভাব।”১
আনন্দমঠ উপন্যাসের মূল ঘটনা আবর্তিত হয় মহেন্দ্র সিং এবং কল্যাণী দেবী নামক এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের দম্পতিকে কেন্দ্র করে, যারা ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে সর্বস্ব হারিয়ে গ্রাম ত্যাগ করে শহরে প্রস্থান করছিল কিন্তু পথে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।এবং এই উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র স্বামী সত্যানন্দকল্যাণীওতার শিশুকন্যাকে গভীর অরণ্য থেকে উদ্ধার করে মহেন্দ্রের কাছে পৌঁছে দেন। এবং মহেন্দ্রস্বামী সত্যানন্দের শিষ্যত্ত্ব গ্রহণ করে সন্তান দলের সদস্য হন।স্বামী সত্যানন্দ তৎকালীন অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধেসন্ন্যাসীদের ঐক্যবদ্ধ করেসন্তানদল গড়ে তোলেন।গভীর অরণ্যে স্বামী সত্যানন্দ এবং তাঁর শিষ্য যথা- ভবানন্দ, জীবানন্দ প্রমুখেরা আশ্রম তৈরি করে সংগ্রামের জন্য অনুশীলন শুরু করেন।এই আশ্রমের নাম ছিল ‘আনন্দমঠ’। তাঁরা আশ্রমে দেশমাতৃকার স্বরূপ হিসেবে মাতৃমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে তাঁর আরাধনা করতেন। তাঁরা বঙ্গজননীর পরাধীনতা দূরীকরণে ব্রতী হয়েছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রএই উপন্যাসের মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, দেশের স্বাধীনতা আসবে ত্যাগ মন্ত্রে দীক্ষিত একনিষ্ঠ সন্ন্যাসী সত্যানন্দেরমত প্রকৃত নেতার অধীনে এবং সন্তানদলের আত্মবল,দেশপ্রেম ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে, আবেদন-নিবেদনের মাধ্যমে নয়।পরবর্তীকালে বঙ্কিমচন্দ্রের দেখানো পথেই ভারতবর্ষের স্বদেশী আন্দোলনে সশস্ত্র বিপ্লবী ওঅগ্নিযুগের সূচনা হয়, যাঁরা চরমপন্থায় বিশ্বাসী ছিলেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের কাছে জন্মভূমি নিছক জনসমষ্টি বা ভৌগোলিক অঞ্চল নয়। তিনি জন্মভূমিকে মাতৃরূপে এবং দেবীরূপে কল্পনা করেছেন। যে কারণে তিনি ভবানন্দের জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন- “আমরা অন্য মামানি না-জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।আমরা বলি, জন্মভূমিই জননী, আমাদের মা নাই,বাপ নাই,ভাই নাই, স্ত্রী নাই,পুত্র নাই, ঘর নাই, বাড়ি নাই, আমাদের আছে কেবল সেই সুজলা, সুফলা, মলয়জসমীরনশীতলা, শস্যশ্যামলা।”২বঙ্কিমচন্দ্র এই উপন্যাসের মাধ্যমে দেশবাসীকে বুঝিয়েছেন যে, নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র, উচ্চ-নিচ সকলের সমবেত প্রচেষ্টা ও জাগরনের মধ্যদিয়েই দেশমাতৃকার মুক্তির সম্ভব। তাই সত্যানন্দ সন্তানদলকে দীক্ষিত করতে গিয়ে বলেছেন, “সকল সন্তান একজাতীয়।এ মহাব্রতে ব্রাহ্মণ শূদ্র বিচার নাই।”৩
বঙ্কিমচন্দ্র দেশকে মা রূপে কল্পনা করে জন্মভূমির সঙ্গে মাতৃদেবীর তুলনা করেছেন এই উপন্যাসে।সত্যানন্দের মধ্যদিয়ে তিনি দেশমাতৃকার তিনটি রূপের বর্ণনা করেছেন। উপন্যাসের এক জায়গায় সত্যানন্দ মহেন্দ্রকে আনন্দমঠ-এর একটি কক্ষে দেখালেন মায়ের “ সর্বাঙ্গ সম্পন্নাসর্ব্বাবরন-ভূষিতা জগদ্ধাত্রী মূর্তি”যাঁকে দেখিয়ে সত্যানন্দ বলেন,“মা যা ছিলেন”, এরপর তিনিঅন্য কক্ষে দেখান মায়ের “কালি-অন্ধকারসমাছন্না কালিমাময়ী। হৃতসর্বস্ব-এইজন্য নগ্নিকা। আজি দেশের সর্বত্রই শ্মশান-তাইমা কঙ্কাল-মালিনী।…দেখ মাযা হইয়াছেন”, এবং সর্বশেষকক্ষে তিনি দেখান “সুবর্ণনির্ম্মিতা দশভূজা প্রতিমা নবারুণকিরণে জ্যোতির্ম্ময়ী হইয়া হাসিতেছে”- যাঁকে দেখিয়ে সত্যানন্দ বলেন, “ এই মা যা হইবেন।দশভূজ দশদিকে প্রসারিত,- তাহাতে নানা আয়ুধরূপে নানা শক্তি শোভিত, পদতলে শত্রুবিমর্দ্দিত, পদাশ্রিত বীরকেশরী শত্রুনিপীড়নে নিযুক্ত, দিগ্ভূজা।”৪ অর্থাৎ বঙ্কিমচন্দ্র দেখালেন যে, আমাদের জন্মভূমি দেশ মা পূর্বে ধনে,সম্পদে,ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ ছিল, যাঁকে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বিনষ্ট করে কালিমালিপ্ত করেছে। এবং এই মা ভবিষ্যতে মুক্তি লাভ করে পুনরায় দশভূজা হয়ে উঠবেন। ভারতবর্ষের জাতীয়তাবাদে এই মাতৃমূর্তির বর্ণনা বিভিন্নভাবে স্বদেশী আন্দোলনকারীদের মনে অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সঞ্চার করেছে তাতে সন্দেহ নেই।
<script async src=”https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-2377242298177547″
crossorigin=”anonymous”></script>
বঙ্কিমচন্দ্র১৮৭৫খ্রিস্টাব্দে দেশমাতৃকার বন্দনা হিসেবে ‘বন্দেমাতরম্’-গানটি রচনা করেছিলেন। কিন্তু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি এই গানটি আনন্দমঠ উপন্যাসে সংযোজন করেন।যদুভট্ট-এরসুরে এই ‘বন্দেমাতরম্ ’-গানটি পরবর্তীতে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকারীদের কাছে জাতীয় মন্ত্রে পরিণত হয়েছিল।১৯০৭খ্রিস্টাব্দে মাদাম ভিকাজি কামা স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম জাতীয় পতাকার যেরূপ প্রদান করেছিলেন সেখানেও দেবনাগরী হরফে্‘ বন্দেমাতরম্ ‘ শব্দটি লেখা ছিল।১৯০৯খ্রিস্টাব্দে শ্রী অরবিন্দ ঘোষ “Mother I bow to thee” -শিরোনামে এই গানটির ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র আনন্দমঠ উপন্যাসে ‘বন্দেমাতরম্’ গানটির মধ্যদিয়ে ব্রিটিশসিপাহীর বিরুদ্ধে সন্ন্যাসীদলের সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছেন। তাই সিপাহীরা যখন সন্তানদলের ওপর আক্রমণ করে সেই সময় ভবানন্দ বলেন,“ এই তরঙ্গে আজ সন্তানকে ঝাঁপ দিতে হইবে…এই সময়ে গাও বন্দেমাতারম্! ”৫
বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর আনন্দমঠেকেবলমাত্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারাইপ্রদর্শন করেননি, একইসঙ্গে তিনি কল্যাণী, শান্তি, গৌরীদেবী, নিমাই প্রমুখ নারী চরিত্র গুলির মধ্যদিয়ে জাতীয়তাবাদী সংগ্রামে নারীদের ভূমিকা ও অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। শান্তি ( নবীনানন্দ ) চরিত্রের মধ্যদিয়ে তিনি বুঝিয়েছেন যে সঠিক শাস্ত্র ও অস্ত্র শিক্ষার মধ্যদিয়ে একজন নারীও সন্তানদলের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, যাঁকে সত্যানন্দেরমত গুরু নিজহস্তে দীক্ষিত করেছেন এই উপন্যাসে।
বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ ’- এ যে ধরনের জাতীয়তাবাদ ও স্বদেশপ্রেম দেখানো হয়েছে তা কেবল মাত্র ঊনবিংশ শতাব্দীতেইনয়বর্তমান যুগেও গুরুত্বপূর্ণ।তাঁর বৈপ্লবিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পদ্ধতি নিয়ে অবশ্যই বিতর্কের অবকাশ থাকতে পারে।কিন্তু দেশমাতার প্রতি যে অবিচল শ্রদ্ধা ও ভক্তি, এবং ভারতমাতার দুর্দশার প্রতি মানুষকে সচেতন করার যে প্রচেষ্টা তিনি করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। ব্রাহ্মণ-শূদ্র,উচ্চ-নিচ-এই জাতিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে মা রূপে পূজা করার মধ্যদিয়ে দেশের সেবাকরাই হলো একজন ভারতীয়র প্রকৃত কর্তব্য। ভারতবর্ষের উন্নয়ন, শ্রীবৃদ্ধিএবং তাঁর গৌরব রক্ষা করা ভারত মাতার সন্তান হিসেবে আমাদের সকলের অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব।যে‘আনন্দমঠ ‘-কে রবীন্দ্রনাথঠাকুর জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের‘গীতা ‘ বলে উল্লেখ করেছিলেন তাকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অবশ্যই আমাদের পাঠ ও বিশ্লেষন করাউচিত। এবং তার মধ্যদিয়ে স্বদেশপ্রেমের প্রকৃত অর্থ উন্মোচন করে একজন প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ভারতবর্ষের অগ্রগতিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
গ্রন্থপঞ্জি
১. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, “ধর্ম্মতত্ত্ব”( একবিংশতম অধ্যায়: প্রীতি ),বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য গ্রন্থাবলী- খন্ড ২,শ্রী সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ( প্রকাশক ),( কলিকাতা : বসুমতী সাহিত্য মন্দির ), পৃ. ৬২।
২. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,“আনন্দমঠ”, ষষ্ঠ সংস্করণ,শ্রীউমাচরণ ব্যানার্জি ( প্রকাশক ),( ক্যালকাটা : বঙ্কিমচন্দ্র প্রেস, ১৮৯৭ ), পৃ. ৩৩।
৩.প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৬।
৪. প্রাগুক্ত, পৃ. ৪২।
৫. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫৯।
৬. সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়,“বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- স্বাতন্ত্র্যের সন্ধানে”, সত্যব্রত চক্রবর্তী ( সম্পাদিত),ভারতবর্ষ রাষ্ট্র ভাবনা, তৃতীয় সংস্করণ,( কলকাতা :প্রকাশন একুশে, ২০১৪ ), পৃ. ৯৭-১১০
Pihu Karmakar
Intern, Asia in Global Affairs
(The views and opinions expressed in this article are solely those of the author and do not reflect the official policy or position of Asia in Global Affairs.)
Leave a Reply